পিনাকীরা কোন কালে পাহাড়ে বাংগালী-সেনার উপস্থিতি মেনে নিতে পারেনি

0
38

দুই-পাঁচ লাইন লেখা পক্ষে গিলিয়ে অতঃপর মরণব্যাধি ট্যাবলেট গিলানো-কে বুঝতে না পারা বাংগালী নির্বোধ!

পিনাকী ভট্টাচার্য-কে অনেকে দুধে ধোয়া তুলসীপাতা মনে করে! তরিকা ভেবে মাথায় তুলে রাখে! এসমস্ত মাথামোটা বেকুব গুলো এটা বুঝে না যে পিনাকীরা কোন কালে পাহাড়ে বাংগালী-সেনার উপস্থিতি মেনে নিতে পারেনি।

দুই-পাঁচ লাইন লেখা বাংগালীকে পক্ষে গিলিয়ে অতঃপর মরণব্যাধি ট্যাবলেট গিলানো পিনাকীকে বুঝতে না পারা বাংগালী নির্বোধ ছাড়া কিছুনা। চিরসত্য তুলে ধরার মতো নীতিনৈতিকতা মূল্যবোধ, লালন ধারণ করেনি সে। লাল কুকুর শেয়ালের ভাই। মদ লাল বোতলে রাখলে লাল দেখাবে আর নীল বোতলে রাখলে নীল দেখাবে- এটাকে অলৌকিক কিছু ভাবলে সেটা ভূল। পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ঘুমের ঘরেও মিথ্যাচার করা ইমতিয়াজ মাহমুদের মতো জ্ঞানপাপী বামদের পক্ষে যখন পিনাকীরা অবস্থান নেয় তখন বুঝতে হবে পিনাকীরা কোন ধাঁচের মানুষ৷ এ বিষয়টি নিয়ে আমি পূর্বেও বহু লেখায় প্রসঙ্গ টেনে উল্লেখ করেছি। মধ্যেরাতে পিনাকী তাঁর ফেসবুক পেইজে পার্বত্য চট্টগ্রামে ফাইভ-স্টার হোটেল নির্মাণের লাভ ক্ষতি প্রসঙ্গ টেনে যে স্ট্যাটাস প্রসব করেছে তা পার্বত্য বাংগালী ও সেনাবাহিনীকে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টার অংশ। পিনাকী সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর হতে পারে তাই বলে যে, সে মুসলিম বাংগালীর স্বপক্ষের যোদ্ধা এটা ভাববার কোনো অবকাশ নেই। আর এটা যাঁরাই ভাবে তাঁরা এখনো বোকার স্বর্গে বাস করে।

এ কালে সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনের সবচেয়ে সহজ উপায় সরকারের সমালোচনা করা এবং ধর্ম-জাতি, বর্ণ নিয়ে একপেশে লেখালেখি করা। এটা করলে যে লাভটা হয় সেটা হলো সমালোচনা- বিতর্ক যেটা হোক তাতে সমস্যা নেই, অন্ততপক্ষে এটা করে সস্তা “জনপ্রিয়তা অর্জন করা যায় খুব সহজেই।”

বান্দরবান চিম্বুক পাহাড়ে ফাইভ-স্টার হোটেল নির্মাণ সরকারী খাস ভূমিতে হচ্ছে কারোরই দখলীয় বা দালিলিক মালিকানা ভূমিতে নয়। এ নিয়ে ম্রোদের কালচার শোডাউনে নামিয়ে অভিনব প্রতিবাদ করেছে- কারা ইন্ধন দিয়ে এসব করিয়েছে তা কারোরই অজানা নয়।

সমতলের কতিপয় শ্রেণীর অনেক সস্তা আবেগের চিন্তাশীল ব্যক্তিবর্গ এই নিয়ে রাষ্ট্রের উন্নয়ন কাজের বিরোধিতা করে ম্রোদের উচ্ছেদ করার আশঙ্কা প্রকাশ করে এবং প্রকৃতির বিপর্যয় হবে বলেও মায়াকান্না করছে! যেহেতু উক্ত উন্নয়ন প্রকল্পের ধারপ্রান্তে কোন উপজাতীয়দের বসতি নেই সেহেতু উচ্ছেদের আশঙ্কাও নেই। সুতরাং, ৮ হাজার ম্রো উপজাতি এখানে উচ্ছেদ হওয়ার কোন কারণ নেই। ম্রো উচ্ছেদ হওয়ার যে, আশঙ্কা উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং যে ধুয়ো তোলা হয়েছে তা উদ্দেশ্য প্রণোদিত মিথ্যাচার। পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসবাদ কায়েম করতে বাধা সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড। যত উন্নয়নমূলক কাজ হবে ততই পাহাড়ে মানুষের আনাগোনা হবে, ‘তখন সন্ত্রাসবাদ কায়েম এবং অবৈধ অস্ত্র নিয়ে চাঁদাবাজি, অপহরণ অপতৎপরতা’ বাধাপ্রাপ্ত হবে। যার কারণে পাহাড়ে উন্নয়নমূলক কাজে সন্ত্রাসীদের বাধা থাকে।

পিনাকী তার লেখায় জোর গলায় বলেছে সকলকেই মেনে নিতে হবে রাষ্ট্রের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়িদের ঐতিহাসিক বিরোধী ছিল! এমন মনগড়া মন্তব্য একদম হাস্যকর এবং অবান্তরও বটে। সরকারের পক্ষ হতে কখনো পাহাড়িদের সাথে ঐতিহাসিক বিরোধী ছিল না। বরং ৭১ সালে দেশ সদ্য স্বাধীন হওয়ার পর ৭৩ সালে উপজাতীয় নেতা এম.এন লারমা সরকারের সাথে বিরোধ সৃষ্টি করে অস্ত্র হাতে নিয়ে। এ বিরোধ উপজাতীয়দের একটি কতিপয় অংশ হতে সৃষ্টি হয়। স্বায়ত্তশাসন দাবির অন্তরালে মূলত বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রে ভারতীয় হস্তক্ষেপ জিইয়ে রাখা এবং নিজেরা আলাদা রাষ্ট্র গঠন করার প্রচেষ্টা ছিল এ বিরোধের মূল কারণ। তৎসময় রাষ্ট্রীয় স্থাপনা, বনবিভাগ ও রাষ্ট্রীয় বাহিনীর উপর ৭৫ হতে ৭৭ সালে অতর্কিত হামলা হয়। সদ্য স্বাধীন হওয়া যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের অপ্রস্তুত সরকারের পক্ষে তখন হামলা ঠেকানো অসম্ভব ছিল। বান্দরবান সাঙ্গু নদীতে সেনাদের উপর অতর্কিত হামলা তারই জলন্ত প্রমাণ। সেই হামলায় ৫ সেনাসদস্য নিহত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের নির্মম হত্যাকাণ্ডগুলোর ইতিহাস পিনাকী এড়িয়ে গেছে! শুধু সেকালের নয়ই চুক্তির একালেও বিচ্ছিন্নতাবাদীরা হামলা পরিহার করেনি!

পিনাকী রাষ্ট্রের সাথে পাহাড়িদের বিরোধকে ঐতিহাসিক বিরোধ বলে উল্লেখ করেছে, এ থেকে প্রতিয়মান হয় যে, পিনাকী হয়তো অজ্ঞতা থেকে এমনটাই বলেছে নচেৎ স্বইচ্ছায় মিথ্যাচারে আশ্রয় নিয়েছে।

পিনাকী তার লেখায় পাহাড়ের বিরাজমান পরিস্থিতি তুলে ধরেনি, এমনকি তুলে ধরেনি কি কারণে পাহাড়ের সংকট ঘনীভুত হয়েছে। তার অভিযোগ পাহাড়িদের সমমনা সমতলিদের সমস্যা নাকি রাজনৈতিক সমস্যা! রাজনৈতিক সমস্যা ভেবে তো সরকার ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে বিশেষ গোষ্ঠীকে অতিরঞ্জিত সুযোগ সুবিধা দিতে গিয়ে রাষ্ট্রের বৃহৎ জনপদ বাংগালীকে অবজ্ঞা করেছে এবং মৌলিক অধিকার হরণ করছে। সংবিধানকে চরমভাবে অবমাননা করে একপেশে খামখেয়ালিভাব বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জেএসএস সন্তু-কে বিশেষ সুবিধা দিয়ে পার্বত্য চুক্তি সাক্ষর করে। উপজাতীয়দের এতো সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পরেও কি পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্রধারীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে? চুক্তির মৌলিক শর্ত লঙ্ঘন করে পাহাড়ে এখনো অবৈধ অস্ত্রধারী বিদ্দমান। তো সেনাবাহিনী তো পাহাড়ে থাকবে৷ অবৈধ অস্ত্রধারী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাক, সেনাবাহিনীও ব্যারাকে ফিরে যাবে। তখন না হয় সবাই এ প্রশ্নটি করুক পাহাড়ে সেনাবাহিনীর তাবেদারী কেন? পিনাকী তার লেখার শেষাংশে বাংগালীদের সমতলী হিসেবে উপস্থাপন করেছে আর উপজাতীয়দের পাহাড়ি হিসেবে উপস্থাপন করেছে! পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৬০০ শতাব্দীর তৎসময় উপজাতীয়রা চম্পকনগর সহ পাশ্ববর্তী দেশগুলো হতে যুদ্ধের তীব্র হাঙ্গামার শিকার হয়ে তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রামে আশ্রয়ে আগমণ করেন! অথচ আজ সেই উপজাতীয়রা একটি কুচক্রী মহলের ইন্ধনে নিজেদেরকে ভূমি পুত্র হিসেবে দাবি করে! ইতিহাসকে এইভাবে মিথ্যাভাবে প্রকাশ করা বুদ্ধিবৃত্তি করার শামিল। তৎসময় পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংগালীরও স্বল্প পরিসরে বসবাস ছিল। স্বল্প সংখ্যা বাংগালীরা কাপার্সমহল ও কাপ্তাই এলাকায় বসবাস করে। তবে তা খুবই নগন্য ছিল৷ পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতীয়দের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংগালীরা ছিল না তা ঠিক। এজন্য পার্বত্য বাংগালীদের সমতলি বলার কোন অবকাশ নেই৷ বরংচ পিনাকীদের মতো কিছু কথিত বুদ্ধিজীবি জ্ঞানপাপী পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রকৃত বাস্তবতা না জেনে একপেশে মনগড়া মিথ্যাচার কুৎসা রটিয়ে দেয় বাংগালী ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here