দীঘিনালায় উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের মদদে ঘরবাড়ি নির্মাণে বাধা দেওয়ার মিথ্যা নাটক

0
44

                                      

স্বাধীন রাষ্ট্রে দেওয়ানি আইন সর্বত্র সমান হওয়া উচিত। কিন্তু দেশের পার্বত্য অঞ্চলের তিন জেলায় ভূমি ব্যবস্থাপনায় ভিন্ন আইন বিরাজ করছে। ‘পার্বত্য বিশেষ আইন’-এর অধীনে ভূমি ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য এবং বরাদ্দ সহ সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে উপজাতীয় নেতারা। একটি সম্প্রদায় হিসাবে, সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙ্গালীরা জমির কাগজপত্র নিয়ে বসবাস করে, তবে ভূমি সংক্রান্ত সমস্ত কর্তৃত্ব বা ক্ষমতা সমস্ত উপজাতি বা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর হাতে। সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকদের মতে পার্বত্য অঞ্চলে উপজাতি নেতা বা কর্তাব্যক্তিরা নিজেদের স্বার্থে ‘ইচ্ছাকৃত’ জটিলতা সৃষ্টি করে রেখেছেন।

পার্বত্য অঞ্চলে ৮০ শতাংশ বাসিন্দা কাগজপত্রসহ বৃহৎ উপজাতীয় বাসিন্দাদের স্থায়ী বসবাসের জন্য এ জাতীয় কাগজপত্রও নেই। তারপরও বাঙালিদের জমিই দখল করা হচ্ছে সারাক্ষণ। শান্তিকামী বাঙালিরা নিজ ভূমিতে নির্বাসিত জীবনযাপন করছে।

জানা যায়, ১৯৮৬ সালে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার ৫ নম্বর বাবুছড়া ইউনিয়নের সোনামিয়া টিলার বাঙালিদের গুচ্ছগ্রামগুলো তৎকালীন শান্তিবাহিনীর অপতৎপতার কারণে স্থানান্তর করা হয়। কালের পরিক্রমায় বাঙালিদের ফেলে যাওয়া অধিকাংশ জমি উপজাতীয়রা দখল করে নেয়। ২০১৬-২০১৭ সাল পর্যন্ত সোনামিয়া টিলার ৮১২টি বাঙালি পরিবারের সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত খাসভূমি দখল করে নেয় পার্বত্য অঞ্চলের সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ (প্রসিত) এর মদদপুষ্ট উপজাতিরা।

এছাড়া খাগড়াছড়ির গরুকাটা এলাকায় পাহাড়ি এলাকা গুমরা শান্তি কুকিছড়া ও বাঙালি জগদীশ চন্দ্রনাথের স্কুলবাড়ির মাধ্যমে ঘাতক রাজ্যের প্রত্যক্ষ রাজ্যে একটি বৌদ্ধ মন্দির প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে ইউপিডিএফ। জগদী চন্দ্রকে কেন্দ্রে নিয়ে মুখ খুললে তাকে হুমকি দেওয়া হয়

গত, বছরের ৪ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান নিরীহ জগদীশ। স্থানীয় বাসিন্দা ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের তথ্যমতে শুধু জগদীশের জমি কিংবা সেনাবাহিনীর প্রত্যাহারকৃত ক্যাম্পের পরিত্যক্ত জমিই নয়, এমন অসংখ্য নিরীহ পাহাড়ি বাঙালি মালিকানা পাহাড়ি ভূমি ধর্মীয় উপসানালয় কিংবা স্কুল, ভাবনা কেন্দ্র, কিয়াংঘরসহ নানা নামে কৌশলে দখল করছে উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীরা। এসব নিয়ে প্রতিবাদ তো দূরের কথা সামান্য মুখ খুললেই হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনসহ নানা নৃশংসতার শিকার হতে হচ্ছে বাঙালিদের।

বাঙালিরা জীবনের মায়ায় বাপ-দাদার পাহাড়ি ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্রে চলে যাচ্ছেন । তারা চঞ্চল উপজাতি বা চাই এনরু-বলিউডের রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক সুযোগ নিয়ে তাদের অভিজ্ঞতার সাথে বাঙালিদের কারসাজি করছে। ঠাইগড়ের গরুকাটা এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাসকারী সাতক্ষীরা গ্রুপকে উপজাতি সন্ত্রাসীরা বিতাড়িত করেছে।

উপজাতীয় সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ (মূল) এবং জেএসএস (মূল) স্থানীয় সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বেশি কৌশলে পার্বত্য এলাকার এই ভূমি দখলে তৎপরতা চালাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, ১৯৯৮ সালে সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস, সন্তু লারমা) সঙ্গে শান্তিচুক্তির পর যেসব এলাকা থেকে সেনাবাহিনী ও পুলিশের ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে তার অধিকাংশই ইউপিডিএফ (প্রসীত বা মূল) ও জেএসএসের ইন্ধনে নানা কৌশলে অবৈধভাবে দখল করা হয়েছে। আর এই দখলের মুখ্য হাতিয়ার হিসেবে সেখানে স্থাপন করা হচ্ছে উপজাতীয়দের নানা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কিংবা স্কুল ঘর।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা প্রশাসক বলেন, পার্বত্য ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন হলে এখানে পরিবেশবান্ধব ক্ষুদ্র কৃষি শিল্পের ব্যাপক উন্নয়ন সম্ভব হবে। ইতো মধ্যেই এখানে কফি, কাজু বাদাম, আম, ড্রাগন, চা, কমলাসহ নানা ধরনের কৃষি ফল-ফলাদি উৎপাদিত হচ্ছে। এগুলো শিল্প প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত করে যথাযথ বাজারজাত করা হলে কেবল পার্বত্য অঞ্চলের নয় গোটা দেশের চেহারায় পাল্টে যেতে পারে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল খবর সবার আগে জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন*

https://t.me/savecht


 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here