কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বছরে সরকারকে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব দিচ্ছে ।বাজার ফান্ড কর্তৃপক্ষের এজেন্টরা ট্যাক্স-টোল আদায়ে খুবই সোচ্চার । কিন্তু গত ১৫ বছরেও কোন উন্নয়নের ছোয়া লাগে নাই খাগড়াছড়ি জেলার সবচেয়ে বড় তিনটহরী কাঁচাবাজারের। ক্রেতা-বিক্রেতারা বছরের পর বছর নানা রকম ভোগান্তি শিকার হলেও তা দূর করার জন্য কোন উদ্যোগ নেই প্রশাসন কিংবা বাজার ফান্ড কর্তৃপক্ষের।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ নিয়ন্ত্রণাধীন বাজার ফান্ড অফিস সূত্রে জানা যায়, স্থানীয়রা তাদের প্রয়োজনে ১৯৮০ সালে খুব ছোট পরিসরে বাজারটি গড়ে তোলে। স্থানীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠায় ১৯৮৮ সালে বাজার ফান্ড কর্তৃপক্ষ ১ দশমিক ২০ একর জমি অধিগ্রহণের পাশাপাশি মানিকছড়ি রাজপরিবার আরও ১ একর জমি দান করলে সর্বমোট ২ দশমিক ২০ একর জায়গার ওপর গড়ে উঠে জেলার সবচেয়ে বড় শাকসবজির বাজারটি।
বাজারটিতে ১৫৫টি দোকান রয়েছে। প্রতি বছর দোকানগুলো ১ বছরের জন্য ইজারা দেয় বাজার ফান্ড কর্তৃপক্ষ। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে নামমাত্র ৭ লাখ টাকায় বাজারটি ইজারা নেয় মানিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। মূল ইজারাদারের উপস্থিতি বাজারে দেখা না গেলেও সাব-ইজারাদারদের দাপটে অস্থির বাজারে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা। জেলা পরিষদ নির্ধারিত ট্যাক্স-টোলের চেয়ে প্রতিটি পণ্যে, পণ্যবাহী প্রতিটি ট্রাক থেকে বেশি ট্যাক্স-টোল নিচ্ছেন সাব-ইজারাদাররা।
তিনটহরী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন গড়ে এক-দেড় কোটি টাকার লেনদেন হলেও শান্তিতে নেই ব্যবসায়ীরা। কারণ, বাজারটিতে ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই, সবজি শেড নেই, বিশ্রামাগার নেই, ভালো থাকার বা খাবার হোটেল নেই। গলিগুলোও পরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠেনি। পুরো বাজার খানাখন্দক ভরা থাকায় সব মৌসুমেই ভোগান্তিতে থাকে বাজারের ব্যবসায়ীরাসহ বাইরে থেকে আসা ব্যবসায়ীরা। তিনি এসব সমস্যা নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বাজার ফান্ড কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন।
বাজার ফান্ডের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী বলেন, জেলার সবচেয়ে বড় কাঁচাবাজারটির নানা সমস্যা সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন। ইজারার সব অর্থ বাজার ফান্ড পায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইজারার ৩৫ শতাংশ টাকা পায় তিনটহরী ইউনিয়ন পরিষদ, ১০ শতাংশ পায় রাজ চৌধুরী এবং ১ শতাংশ ভূমি কর হিসেবে দিতে হয়। সব মিলিয়ে ৪৬ শতাংশ টাকা অন্যরা নেওয়ার পর বাকি ৫৪ শতাংশ টাকা বাজার ফান্ড পায়। এই টাকা দিয়ে ফান্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় মেটানো হয়। শুধু ইজারার টাকা দিয়ে বাজারের উন্নয়ন সম্ভব নয়। পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রত্যেকটি বাজারের উন্নয়নের জন্য মাস্টারপ্ল্যান করছে। সেই প্ল্যান অনুযায়ী কৃষক, নারী কৃষক, ব্যবসায়ী, স্থায়ী দোকানদারদের চাহিদা মোতাবেক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পাদন করা হবে।